জামালপুর প্রতিনিধিঃ
মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনের ৩ নম্বর এজেন্ডায় মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড ইস্যুটি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ আগামীকাল ৩ অক্টোবর, বাংলাদেশ জেনোসাইড ইস্যুতে আলোচনার জন্য জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনে একটি হল বরাদ্দ করেছে।
একাত্তরের গণহত্যার সুবিচার ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের নিয়ে জামালপুরে মানববন্ধন করেছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১।
আজ রবিবার (০২ অক্টোবর) সকালে শহরের দয়াময়ী মোড়ে শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লীর সামনে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ জামালপুর জেলা শাখার আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী এ মাবববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী ইমাম দুলাল,জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা,সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান ডল,জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহী মাকাম, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম,জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল চিশতি, ড. মাহমুদুল হক শুভ,সচেতন কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিক বজলুর রহমান,কবি তারিকুল ফেরদৌস,জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ তানভীর আহমেদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি মুক্তা আহমেদ,সাবেক ছাত্রনেতা বিএম রাজন,জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান বাবু,জেলা ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূর আলম সুজন, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামীম মিয়া প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গৌরবময় বিজয়ের গেলো সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা স্মরণ করেছি চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের উত্থানকে। স্মরণ করেছি অগণিত মানুষের আত্মত্যাগকে, স্মরণ করেছি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে । স্মরণ করেছি মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের ও বীরঙ্গনা মা-বোনদের। প্রত্যয়ী হয়েছি বাংলাদেশে গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের অপরাধকে তুলে ধরার। স্বাধীনতা অর্জনের পাঁচ দশকে আমরা আমাদের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা পূরণের স্বীকৃতিও আদায় করে নিয়েছি। বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখন সময়ের দাবি।
বক্তারা আরও বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এতো সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে এতো বেশি সংখ্যক লোককে হত্যা করার নজির নেই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী জেনোসাইডের সেই নৃশংসতার নজির সৃষ্টি করেছে। হত্যা, ধর্ষণ, লুঠতরাজ, উৎখাত, উৎপীড়নসহ একটি জাতিকে বিপন্ন করার সকল চেষ্টাই তারা করেছে। স্বাধীনতার পর ৫১ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই নৃশংসতার ঘটনাকে জেনোসাইড হিসেবে জাতিসংঘ আজো স্বীকৃতি দেয়নি। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আগামীকাল ৩ অক্টোবরের আলোচনায় ২৫ শে মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জোর দাবী জানান বক্তারা।