মেহেদী হাসানঃ
“হৃদয়ে রবিন্দ্রনাথ-চেতনায় নজরুল” এই শ্লোগানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করলেন জামালপুর জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনেক বিষয়ে পরস্পরের কাছাকাছি ছিলেন এবং সে নৈকট্য কম তাৎপর্যপূর্ণ নয়। দুজনেরই প্রধান পরিচয় তাঁরা কবি। নিজেদের তাঁরা ওভাবেই দেখতেন, লোকেও তাঁদের সেভাবেই দেখে। তাঁরা দুজনেই আবার ছিলেন বহুমুখী সাহিত্যের সব শাখাতেই তাঁদের কাজ আছে এবং তাঁরা দেশের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।সমাজের অগ্রগতি ও মানুষের মুক্তি নিয়ে তাঁদের চিন্তা ছিল সার্বক্ষণিক। রবীন্দ্রনাথের মতোই নজরুলেরও ছিল সংগীতের প্রতি গভীর আকর্ষণ এবং সংগীতের ক্ষেত্রে দুজনের অবদানই অসামান্য। হাজার হাজার গান তাঁরা রেখে গেছেন। গানে সুর দিয়েছেন, সুর সৃষ্টি করেছেন, সুরের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। নিজেরাও গাইতেন।
আজ শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধায় জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু মিলনায়তনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে তাঁদের স্মরণ করা হয়। জামালপুর উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও রণেশ দাশগুপ্ত ললিতকলা বিদ্যায়তনের শিল্পীবৃন্দের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় তাঁদের সৃজনকর্ম।
জামালপুর উদীচী জেলা সাংসদ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী ইমাম দুলার এর সভাপতিত্বে ও
সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার রাজভর এর সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি জাহেদা শফির মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও জামালপুর জেলা উদীচীর উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হায়দার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন মুরাদ ও জেলা কালচারাল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ নিয়ে বক্তারা বলেন, রবীন্দ্রনাথ এই উপমহাদেশে বাংলা সাহিত্য ও কাব্যধারার এক আমূল পরিবর্তন এনেছেন। সাহিত্যের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশ ও ভারতকে একই সূত্রে গেঁথেছেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাব্য ও গানের যে প্রভাব, রবীন্দ্রনাথ সে প্রভাব সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর কবিতার ছন্দ কিংবা গানের সুর বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের উজ্জীবিত করেছে অহর্নিশি।