মেহেদী হাসানঃ
কিছুদিন আগেও জামালপুরে রক্তের প্রয়োজন হলেই চরম বিপাকে পড়তেন সাধারণ মানুষ । অসুস্থ আপনজনের জন্য রক্ত জোগাড়ে ছুটে বেড়াতেন এখানে–সেখানে। এখন এমন মানুষের রক্ত জোগাড়ে ছুটে বেড়ান একদল তরুণ। যখন যার প্রয়োজন, তখন তার জন্য রক্ত জোগাড় করে দিচ্ছেন তাঁরা। রাতদিন যেকোনো মুহূর্তে রক্ত সংগৃহীত হয়ে যাচ্ছে। শুধু সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সংগঠনটির নাম ‘প্রিয় জামালপুর ফাউন্ডেশন’।

২০২০ সালের ৭০ জন সদস্যদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৭০ জন সদস্য দিয়ে শুরু হলেও এখন এই সংগঠনের নিয়মিত ডোনার মোট ১৯৮ জন। যারা প্রতি চার মাস পর পর নিয়মিত রক্তদান করে থাকেন।

সংগঠনটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নূর আহাম্মেদ নবীন বলেন-আমি সংগঠণে যুক্ত হবার
আগে থেকেই রক্ত দান করে আসছি। এ পর্যন্ত ২৮ বার রক্ত দিয়েছি।এখনো চেষ্টা করি রক্ত দেওয়ার। এছাড়াও সংগঠন এর রক্তদানের অনুরোধ আসলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে রক্ত খুঁজে পেতে সাহায্য করি। রক্তদানের অনুভূতি বলে শেষ করার মতো না। যখন আমার মাধ্যমে একটা মানুষ এত বড় একটি সহযোগিতা পায়,তখন সব কষ্ট ভুলে যাই।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহাম্মেদ বলেন,আমাদের সংগঠন এর কাজের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিনামূল্যে ও স্বেচ্ছায় রক্ত দান করা। আমরা সকল সদস্য সব সময় চেষ্টা করি রক্ত সংগ্রহ করে দিতে। আমরা চাই সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে এর কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে।

জামালপুর জেলা ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফয়সাল আহাম্মেদ বলেন, আমাদের সংগঠনটি একটি অলাভজনক সেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ সংগঠনের মূল লক্ষ্য হলো মানব কল্যাণে কাজ করা। সেই কাজের ধরাবিহকতা বজা রাখতে আমার বিনামূল্যে রক্তদান সেবাটি চালু করি। আমাদের সংগঠনের সদস্য সহ সবাই এগিয়ে আসা ৭০ জন ডোনার থেকে আমরা ১৯৮ জন ডোনার অতিক্রম করতে পেরেছি। এভাবেই আমরা এক হাজার তম রক্ত দান করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা অনলাইনে ও অফলাইনে প্রচারণার মাধ্যমে আরো ডোনার বৃদ্ধি করতে চাই। সংগঠনের এ সাফল্যে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। সবার অনুপ্রেরণায় আমাদের সংগঠন এর এটি একটি বড় অর্জন। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে সংগঠণের সদস্যদের আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রম এর মাধ্যমে । তিনি সকলের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন।

সংগঠনের সদস্য উল্লাস বলেন- আমরা ভালো কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে চাই। আমরা অসহায় মানুষের পাশে থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে যারা কাজ করছে, তাদের জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন সুস্থ রাখেন।

বগাবাইদ এলাকার আমির মিয়া বলেন, দুই মাস আগে আমার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক হয়। রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় প্রতি মাসে দুবার রক্ত দিতে হয়। তাঁর ও পজিটিভ রক্তের জন্য জামালপুর ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরাই রক্তের ব্যবস্থা করে দেন।